আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের পোস্টে আমরা সুস্থ প্রেগন্যান্সির লক্ষণ, সুস্থ মানুষের দেহের তাপমাত্রা কত কেলভিন, সুস্থ মানুষের হৃদস্পন্দন মিনিটে কতবার, সুস্থ নবজাতকের লক্ষণ, হার্ট সুস্থ রাখার উপায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কেও আলোচনা করবো।
সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে । বিস্তারিত উত্তর জানতে পড়ুন
সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে । বিস্তারিত উত্তর জানতে পড়ুন
তাহলে চলুন জেনে নেই একজন সুস্থ ব্যাক্তির সুস্থ থাকার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে।

সুস্থ প্রেগন্যান্সির লক্ষণ

সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে জানবো। এখন আমরা জানবো সুস্থ প্রেগন্যান্সির লক্ষন কি কি। গর্ভাবস্থা হলো মেয়েদের একদিকে সবথেকে সুখের সময়, আবার অন্যদিকে এই সময়ে অনেক বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন একজন মেয়ে।
প্রেগনেন্সির সময় একজন মেয়ের নিজের শরীরের দিকে সবসময় নজর দেয়া উচিত। কারন গর্ভের বাচ্চা সুস্থ রাখতে এবং নিজে সুস্থ থাকতে এই সময় একজন গর্ভবতী নারীর সুষম খাবার, পরিমিত ঘুম, হাল্কা হাটাচলা এবং নিয়ম মেনে সবকিছু করা উচিত।
তাহলেই কেবল একজন গর্ভবতী মা এবং বাচ্চা সুস্থ থাকবে। এখন আমরা সুস্থ প্রেগনেন্সির কয়েকটি লক্ষন সম্পর্কে জানবো। লক্ষনগুলো নিম্নরুপঃ
  • গর্ভাবস্থায় সুস্থ অবস্থায় থাকলে একজন মায়ের পেটে থাকা বাচ্চার স্বাভাবিক ওজন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে প্রায় ৩-৪ কেজি। তবে অনেক সময় এই ওজন বাচ্চার জেনেটিক্স এর ওপর নির্ভর করে।
  • সুস্থ প্রেগনেন্সি চলাকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও পেটের আকার বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
  • সুস্থ প্রেগনেন্সির আরেকটি লক্ষন হলো পেটের মধ্যে শিশুর নড়াচড়া। গর্ভের বাচ্চার বয়স যখন ৫ মাসের মত হয়ে যায়, তখন শিশু হালকা নড়াচড়া শুরু করে। এরপর শিশুর বয়স ৬ মাসে পৌছালে শিশু ব্যথা, শব্দ এবং অন্যান্য উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে থাকে। এরপর শিশুর বয়স যখন ৮ মাস হয়ে যায়, তখন থেকে শিশু অনেক জোরে লাথি মারে।
  • গর্ভাবস্থার সময় যখন শেষ দিকে চলে আসে তখন শিশু প্রসবের জন্য প্রস্তুত হয় এবং শিশুর মাথা সঠিক অবস্থানে চলে আসে।
  • সুস্থ প্রেগনেন্সির আরেকটি লক্ষন হলো স্তন বড় হওয়া। এই সময় একজন মায়ের স্তন বড় হয়ে যায়, অনেক নরম হয়ে যায় এবং স্তনের বোটা কালো হয়ে যায়।
  • গর্ভবতী নারীর জরায়ুর আকার বড় হয়ে যায়। যার কারনে মুত্রথলিতে চাপ পড়ে এবং ঘন ঘন প্রসাবের চাপ বেড়ে যায়।

সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে

রক্তে আমাদের নির্দিষ্ট পরিমান প্লাটিলেট থাকা প্রয়োজন হয়। আমাদের শরীরে প্লাটিলেট সংখ্যা কমে গেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকা হলো রক্তের মধ্যে থাকা এক ধরনের উপাদান। যার কাজ হলো কেটে যাওয়া স্থানে রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করা এবং রক্তক্ষরন বন্ধ করা।
আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা প্রশ্ন করে থাকেন, সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে? উত্তর হলো- একজন সুস্থ মানুষের দেহে প্রতি মিলি লিটার রক্তের মধ্যে ১.৫-৪ লাখ প্লাটিলেট থাকা উচিত। এর থেকে কম বা বেশি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

সুস্থ মানুষের দেহের তাপমাত্রা কত কেলভিন

পূর্বে আমরা সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো সুস্থ মানুষের দেহের তাপমাত্রা সম্পর্কে। আমাদের সবার শরীরের একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা রয়েছে। যে তাপমাত্রা কম বা বেশি হলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
যদি তাপমাত্রা বেশি হয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রে জ্বরের লক্ষন প্রকাশ পায়। আবার কমে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। একজন সুস্থ মানুষের দেহের তাপমাত্রা থাকা উচিত ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা এর কাছাকাছি। সেলসিয়াস স্কেলে যার মান হয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা

পূর্বে আমরা সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানব সুস্থ থাকার জন্য আমাদের কি ধরনের খাবার কোন বেলায় খাওয়া উচিত তা সম্পর্কে। আমাদের শরীর বিভিন্ন কারনে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
যার মধ্যে আমাদের প্রতিদিনের করা কাজগুলোর কারনে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা যদি আমাদের খাবার, ঘুম, চলাফেরা ইত্যাদির দিকে নজর দেই তাহলে আমাদের শরীর খুব কম অসুস্থ হবে। আমাদের সুস্থ থাকার জন্য খাবার তালিকাকে তিনটি পদ্ধতিতে ভাগ করা হয়েছে। নিম্নে এই নিয়ে আলোচনা করা হলো।
  • সকালের খাবার তালিকা – প্রতিটি মানুষের সকালবেলার খাবার তালিকায় ভারী খাবার রাখা উচিত। কারন আমাদের সারাদিনের কাজকর্মের শক্তি যোগাতে সকালের খাবার অনেক বেশি কাজে দেয়। সকালে আমাদের খাদ্য তালিকায় ডিম, দুধ, ভাত অথবা রুটি এবং বিভিন্ন ধরনের ফলমুল খাওয়া উচিত।
  • দুপুরের খাবার তালিকা – দুপুরের খাবার আমাদের ১ টা থেকে দেড় টার মধ্যে সেরে ফেলা উচিত। আর এই সময়ে আমাদের খাবার তালিকায় ভাত, শাক-সবজি (আশজাতীয়), মাছ, অল্প একটু মাংস, ডাল ইত্যাদি রাখা উচিত।
  • রাতের খাবার তালিকা – রাতে আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম খাওয়ার দরকার হয়। এই সময় আমরা দুপুরে যা খেয়েছি তার অর্ধেক খাবার খাওয়া উচিত। খাবার তালিকায় রাতে রাখা উচিত ভাত, সবজি এবং ডাল। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

সুস্থ থাকার উপায়

পূর্বে আমরা সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো সুস্থ থাকার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে। উপায়সমুহ নিম্নরুপঃ
  • সুস্থ থাকার প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো শরীর সুস্থ রাখা। শরীর সুস্থ রাখার জন্য আমরা প্রতিদিন ব্যায়াম করা। এই ব্যায়ামের মধ্যে থাকতে পারে সাইকেল চালানো, সাতার কাটা, হাটাচলা করা ইত্যাদি।
  • আমাদের সময়মতো খাবার খাওয়া উচিত এবং প্রতিদিনের খাবারে স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার খাওয়া উচিত।
  • হাতের মাধ্যমে জীবানু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে অসুখের সৃষ্টি করে। যার কারনে আমাদের প্রতিদিন ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে।
  • সুস্থ থাকার আরেকটি বড় ধাপ হলো নিজেকে সুস্থ রাখা। এক্ষেত্রে আমাদের অতিরিক্ত টেনশন এবং মানসিক চাপ কমানো প্রয়োজন।
  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমানো। একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
  • যাদের শরীর অতিরিক্ত পরিমানে দুর্বল তারা চাইলে বিভিন্ন ভিটামিন সাপ্লিমেট গ্রহন করতে পারেন। এতে করে শরীরে শক্তি আসবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।
  • ডায়াবেটিস এবং উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখা। এছাড়াও বিভিন্ন অসুখ থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা।

শরীর সুস্থ রাখার উপায়

পূর্বে আমরা জেনেছি সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো আমাদের শরীর সুস্থ রাখার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে। উপায়সমুহ নিম্নরুপঃ
  • প্রতিদিন ব্যায়াম করা।
  • সুষম খাবার খাওয়া।
  • প্রচুর পরিমানে পানি পান করা।
  • প্রতিদিন সময় করে মেডিটেশন করা।
  • ডাক্তারের কাছে গিয়ে শরীর চেক-আপ করানো।
  • ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা করা।
  • প্রতিদিন নিয়ম করে ঘুমানো।
  • এলকোহল জাতীয় কোনো কিছু পান না করা।
  • তামাক সেবন থেকে দূরে থাকা উচিত।
  • বাইরের করা রান্না করা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা।

সুস্থ মানুষের হৃদস্পন্দন মিনিটে কতবার

পূর্বে আমরা সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানব একজন সুস্থ মানুষের হার্ট বিট কত থাকে তা সম্পর্কে। হৃদ স্পন্দনের ওপর নির্ভর করে একজন মানুষের সুস্থতা এবং অসুস্থতা নির্ভর করে।
একজন সুস্থ মানুষের প্রতি মিনিটে হৃদ স্পন্দন থাকা প্রয়োজন হয় ৭৫ বিপিএম এর মত। তবে বয়সের তারতম্যের কারনে হার্ট বিট এর পরিমান রাখা হয়েছে ৬০-১০০ বিপিএম।

সুস্থ নবজাতকের লক্ষণ

একটি সুস্থ শিশু জন্মগ্রহনের পর তার কিছু লক্ষন দেখে বোঝা যায় যে শিশুটি কি সুস্থ নাকি কোনো কারনে অসুস্থ। পূর্বে আমরা সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কর থাকে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানব সুস্থ নবজাতকের কিছু লক্ষন সম্পর্কে। লক্ষনগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • জন্মগ্রহনের পর বাচ্চার ওজন হয়ে থাকে ২৫০০-৪০০০ গ্রাম এর মত।
  • বাচ্চার উচ্চতা হয়ে থাকে ৫০ সেমি এর মত।
  • মাথার পরিধি হয়ে থাকে ৩৫-৩৮ সেমির মত।
  • নিঃশ্বাসের হার থাকে প্রতি মিনিটে ৩০-৬০ বার এর মত।
  • হার্ট বিট এর হার থাকে প্রতি মিনিটে ১১০-১৫০ এর মত।
  • হাত এবং পা গুটিয়ে রাখে।
  • শিশু জন্মের পর ২৪ বা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রসাব করে থাকে।
  • শিশুর শারীরিক সক্ষমতা লক্ষ্য করা যায়।
  • শিশুর নড়াচড়া ভালো থাকে।

শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়

আমাদের জীবনে ভালো থাকতে সুস্থতার গুরুত্ব অপরিসীম। কারন সুস্থ থাকলেই তবে আমরা আমাদের জীবন ভালমত কাটাতে পারবো। পূর্বে আমরা সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে জেনেছি।
এখন আমরা জানব একজন সুস্থ মানুশের শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকার ক্ষেত্রে কোন ধরনের উপায় অবলম্বন করতে হয় তা সম্পর্কে। উপায়গুলো নিম্নরুপঃ
  • খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করা।
  • শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা।
  • প্রতিদিন সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
  • অলসতার পরিমান কমানো। সবসময় শুয়ে বসে না থাকা।
  • মানসিক চাপ এবং সমস্ত চিন্তা টেনশন থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা।
  • প্রতিদিন সঠিক পরিমানে ঘুমানো।
  • তামাক সেবন করা থেকে বিরত থাকা।
  • এলকোহল জাতীয় কোনো কিছু পান থেকে বিরত থাকা।

একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক কত লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন

পূর্বে আমরা জেনেছি একজন সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো সুস্থ মানুষের প্রতিদিন কত লিটার পানি পান করা উচিত তা সম্পর্কে। একজন সুস্থ ব্যক্তির তার দেহের ওজনের ৪০ মিলিটার পানি পান করা উচিত। যদি কারো দেহের ওজন ৭০ কেজি হয়ে থাকে। তবে তার প্রতিদিন পানি করা উচিত ৭০*৪০=২৮০০ মিলিলিটার বা ২.৮ লিটার এর মত।

হার্ট সুস্থ রাখার উপায়

পূর্বে আমরা জেনেছি সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে তা সম্পর্কে। এখন আমরা জানব আমাদের হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে। আমাদের হৃদপিণ্ড হলো আমাদের শরীর ভালো রাখার যন্ত্র। এটি খারাপ হয়ে গেলে আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আমাদের হার্ট সুস্থ রাখার উপায়গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • প্রতিদিন সময় করে ব্যায়াম করা উচিত।
  • প্রতিদিনের খাবারে পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার খাওয়া উচিত।
  • প্রতিদিন সঠিক পরিমানে বিশ্রাম নেওয়া এবং ঘুমানো। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা।
  • ধুমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য সেবন থেকে দূরে থাকা।
  • মানসিক চাপ কমানো।
  • এলকোহল সেবন থেকে দূরে থাকা।

লেখকের মন্তব্য

আজকের পোস্ট থেকে আমরা সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে, সুস্থ প্রেগন্যান্সির লক্ষণ, সুস্থ মানুষের দেহের তাপমাত্রা কত কেলভিন, সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা, সুস্থ মানুষের হৃদস্পন্দন মিনিটে কতবার, সুস্থ নবজাতকের লক্ষণ, হার্ট সুস্থ রাখার উপায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জেনেছি।
আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। আমরা এই ধরনের পোস্ট আপনাদের উদ্দেশ্যে শেয়ার করে থাকি। প্রতিনিয়ত পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ফলোও করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 Comments