মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশী কোনটি 

What is the strongest muscle in the human body?

মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশী হল ম্যাসেটার পেশী। এটি চোয়ালের দু’পাশে অবস্থিত এবং চিবানোর জন্য দায়ী। ম্যাসেটার পেশী অন্যান্য পেশীগুলির তুলনায় বেশি শক্তিশালী কারণ:

  • আকার: এটি শরীরের অন্যতম বৃহত্তম পেশী।
  • শারীরবৃত্তীয় সুবিধা: এটি চোয়ালের হাড়ের সাথে এমনভাবে সংযুক্ত যা এটিকে শক্তিশালী লিভারেজ প্রদান করে।
  • তন্তু সংখ্যা: এতে অন্যান্য পেশীগুলির তুলনায় অনেক বেশি পেশী তন্তু রয়েছে।

ম্যাসেটার পেশীর শক্তি আমাদের কঠিন খাবার চিবাতে, জিনিসপত্র কামড়াতে এবং এমনকি দাঁত বেঁকানোর মতো কাজ করতে সাহায্য করে। তবে, অতিরিক্ত চাপ বা চিবানোর সমস্যা থাকলে এই পেশীতে ব্যথা হতে পারে।

মনে রাখবেন যে “শক্তি” বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। যদি আমরা শরীরের ওজনের তুলনায় সর্বোচ্চ বল বিবেচনা করি, তাহলে গ্যাস্ট্রোকনেমিয়াস (বছরের পেশী) সবচেয়ে শক্তিশালী হতে পারে।

তবে, দীর্ঘস্থায়ী শক্তির ক্ষেত্রে, হৃৎপিণ্ড অসাধারণ কার্য সম্পাদন করে, কারণ এটি জীবদ্দশা ধরে প্রতিদিন অবিরাম পাম্প করে।

অবশেষে, সবচেয়ে দ্রুত সংকোচন করতে সক্ষম পেশী হল অনুপল্লবী পেশী যা চোখের নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং, “সবচেয়ে শক্তিশালী” পেশীর নির্ধারণ নির্ভর করে আপনি কোন মানদণ্ড ব্যবহার করছেন তার উপর।

👍👍আরও পড়ুনঃ চিকেন পক্স হলে কি গোসল করা যাবে 

মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশী কোনটি

পেশী কি?

পেশী হলো আমাদের শরীরের এক ধরণের নরম কিন্তু স্থিতিস্থাপক টিস্যু যা নড়াচড়া, চলাফেরা এবং শক্তি প্রয়োগের জন্য দায়ী।

মানবদেহে তিন ধরণের পেশী রয়েছে:

  • কঙ্কাল পেশী: হাড়ের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং আমাদের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এগুলোই আমাদের হাঁটতে, দৌড়াতে, লাফাতে এবং ভার বহন করতে সাহায্য করে।
  • মসৃণ পেশী: অভ্যন্তরীণ অঙ্গ যেমন পাকস্থলী, অন্ত্র, রক্তনালী এবং মূত্রাশয়ের দেয়ালে পাওয়া যায়। এগুলো স্বেচ্ছায় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে।
  • হৃৎপেশী: হৃৎপিণ্ডে পাওয়া যায় এবং অনৈচ্ছিকভাবে কাজ করে। এটি রক্ত পাম্প করে পুরো শরীরে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে।

পেশীর গঠন:

  • পেশী কোষ (Myocyte): পেশীর মূল একক। প্রতিটি কোষে একাধিক সূক্ষ্ম তন্তু (myofibril) থাকে।
  • সারকোমিয়ার: সূক্ষ্ম তন্তুগুলো দ্বারা গঠিত, যা অ্যাক্টিন এবং মায়োসিন নামক প্রোটিনের দীর্ঘ শৃঙ্খল ধারণ করে।
  • টেন্ডন: পেশীকে হাড়ের সাথে সংযুক্ত করে।

পেশীর কাজ:

  • গতি: পেশী সংকুচিত হয়ে হাড় নড়াচড়া করে, যার ফলে আমরা হাঁটতে, দৌড়াতে, লাফাতে এবং অন্যান্য শারীরিক কাজ করতে পারি।
  • শক্তি: পেশী শক্তি উৎপন্ন করে ভার বহন, বস্তু তোলা এবং ধাক্কা দেওয়ার মতো কাজ করতে সাহায্য করে।
  • স্থিতিশীলতা: পেশী আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে স্থির রাখতে এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • তাপ উৎপাদন: পেশী কাজ করার সময় তাপ উৎপন্ন করে যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • রক্ত ​​​​সঞ্চালন: পেশীর সংকোচন রক্তনালীতে চাপ প্রয়োগ করে রক্ত ​​​​সঞ্চালনকে উন্নত করে।

পেশীর যত্ন:

  • নিয়মিত ব্যায়াম: পেশী मजबूत এবং সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য: পেশীর বৃদ্ধি ও মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম: পেশী পুনরুদ্ধারের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।

পেশীর সমস্যা:

  • পেশী ব্যথা: ব্যায়াম, আঘাত বা অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে পেশী ব্যথা হতে পারে।
  • পেশী টান: পেশী দ্রুত প্রসারিত হলে পেশী টান হতে পারে।
  • পেশী টান: পেশী দীর্ঘ

👍👍আরও পড়ুনঃ ডিম্বাণু বের না হওয়ার লক্ষণ

পেশীবহুল শরীর বানানোর উপায়

পেশী বৃদ্ধির জন্য দুটি প্রধান উপাদান প্রয়োজন:

১) প্রশিক্ষণ:

  • প্রতিরোধমূলক ব্যায়াম:
  • নিয়মিত ব্যায়াম:
    • সপ্তাহে 2-3 বার ওজন প্রশিক্ষণ
    • প্রতিটি পেশী গোষ্ঠী সপ্তাহে 2-3 বার লক্ষ্য করুন
    • প্রতিটি সেটে 8-12 টি পুনরাবৃত্তি করুন
  • অগ্রগতি:
    • ধীরে ধীরে ওজন বা প্রতিরোধ বৃদ্ধি করুন
    • ব্যায়ামের রুটিন পরিবর্তন করুন
    • চ্যালেঞ্জ বজায় রাখুন

২) পুষ্টি:

  • প্রোটিন:
    • প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য 1.6-2.2 গ্রাম প্রোটিন খান
    • উচ্চ-মানের প্রোটিন উৎস: মাংস, মাছ, ডিম, দুগ্ধজাত, ডাল, বাদাম
  • কার্বোহাইড্রেট:
    • জটিল কার্বোহাইড্রেট বেছে নিন: পূর্ণ শস্য, ফল, শাকসবজি
    • প্রশিক্ষণের আগে এবং পরে কার্বোহাইড্রেট খান
  • স্বাস্থ্যকর চর্বি:
    • অসম্পৃক্ত চর্বি খান: অ্যাভোকাডো, বাদাম, জলপাই তেল
    • স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট এড়িয়ে চলুন
  • জল:
    • প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন (প্রতিদিন 2-3 লিটার)

অন্যান্য টিপস:

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম:
    • পেশী বৃদ্ধির জন্য বিশ্রাম অপরিহার্য
    • প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমান
  • স্ট্রেস কমান:
    • অতিরিক্ত স্ট্রেস পেশী বৃদ্ধিতে বাধা দেয়
    • যোগব্যায়াম, ধ্যান বা গভীর শ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করুন

মনে রাখবেন:

  • ফলাফল দেখতে সময় লাগে। ধৈর্য ধরুন এবং নিয়মিত থাকুন।
  • একজন প্রশিক্ষকের সাথে পরামর্শ করুন যিনি আপনাকে একটি ব্যক্তিগতকৃত প্রশিক্ষণ এবং পুষ্টির পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারেন।
  • আপনার শরীর শুনুন এবং ব্যথা অনুভব করলে বিশ্রাম নিন।
  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সুস্থ থাকা এবং উপভোগ করা!

 

মানবদেহের বৃহত্তম পেশী কোনটি

মানবদেহের বৃহত্তম পেশী হল গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস, যা নিতম্বের পিছনে অবস্থিত। এটি একটি চওড়া, পুরু পেশী যা উরু এবং নিতম্বের হাড়ের সাথে সংযুক্ত থাকে।

গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাসের প্রধান কাজ হল:

  • শরীরকে স্থির রাখা: দাঁড়ানো, হাঁটা এবং দৌড়ানোর সময় শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • পা নড়ানো: পা পিছনে ঠেলে দেওয়ার জন্য দায়ী, যা হাঁটা, দৌড়ানো এবং লাফানোর জন্য প্রয়োজনীয়।
  • শরীর উত্তোলন: squats, deadlifts এবং lunges এর মতো ব্যায়ামের সময় শরীরকে উত্তোলন করতে সাহায্য করে।

গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস শরীরের অন্যান্য পেশীগুলির তুলনায় বড় কারণ এটি অনেকগুলি পেশী তন্তু দ্বারা গঠিত। এটি শক্তিশালীও কারণ এটি বড় হাড়ের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং এতে দীর্ঘ লিভারেজ রয়েছে।

অন্যান্য বড় পেশীগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • কোয়াড্রিসেপস ফেমোরিস: উরুর সামনের দিকে অবস্থিত, পা সোজা করতে সাহায্য করে।
  • হ্যামস্ট্রিং: উরুর পিছনের দিকে অবস্থিত, পা বাঁকাতে সাহায্য করে।
  • ডেল্টয়েড: কাঁধের উপরে অবস্থিত, বাহু উপরে তুলতে সাহায্য করে।
  • ট্র্যাপেজিয়াস: পিঠের উপরের অংশে অবস্থিত, কাঁধের bıçakları একসাথে টানতে এবং মাথা ঘোরাতে সাহায্য করে।

মনে রাখবেন যে “বৃহত্তম” পেশীর সংজ্ঞা নির্ভর করে আপনি কোন মানদণ্ড ব্যবহার করছেন তার উপর। যদি আমরা শরীরের ওজনের তুলনায় সর্বোচ্চ বল বিবেচনা করি, তাহলে গ্যাস্ট্রোকনেমিয়াস (বছরের পেশী) সবচেয়ে শক্তিশালী হতে পারে। তবে, দীর্ঘস্থায়ী শক্তির ক্ষেত্রে, হৃৎপিণ্ড অসাধারণ কার্য সম্পাদন করে, কারণ এটি জীবদ্দশা ধরে প্রতিদিন অবিরাম পাম্প করে। অবশেষে, সবচেয়ে দ্রুত সংকোচন করতে সক্ষম পেশী হল অনুপল্লবী পেশী যা চোখের নিয়ন্ত্রণ করে।

সুতরাং, “সবচেয়ে বড়” পেশীর নির্ধারণ নির্ভর করে আপনি কোন মানদণ্ড ব্যবহার করছেন তার উপর।

ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম সাহায্য করে পেশীর

ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম পেশীর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে কীভাবে সাহায্য করে:

ক্যালসিয়াম:

  • পেশীর সংকোচন: ক্যালসিয়াম পেশীর কোষের ভেতরে প্রবেশ করে পেশী তন্তুগুলিকে সংকুচিত করার সংকেত দেয়। এটি পেশী নড়াচড়ার জন্য প্রয়োজনীয়।
  • স্নায়ু সংকেত প্রেরণ: ক্যালসিয়াম স্নায়ু কোষ থেকে পেশী কোষে সংকেত প্রেরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • হাড়ের স্বাস্থ্য: ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে, যা পেশীগুলির জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি প্রদান করে।
  • রক্ত ​​​​জমাট বাঁধা: ক্যালসিয়াম রক্ত ​​​​জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, যা আঘাতের পরে রক্তপাত রোধ করতে সাহায্য করে।

পটাশিয়াম:

  • তড়িৎ ভারসাম্য: পটাশিয়াম পেশী কোষের ভেতরে এবং বাইরে তড়িৎ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি পেশীর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয়।
  • স্নায়ু সংকেত প্রেরণ: পটাশিয়াম স্নায়ু কোষ থেকে পেশী কোষে সংকেত প্রেরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা পেশীগুলিতে পর্যাপ্ত রক্ত ​​​​প্রবাহ নিশ্চিত করে।
  • পেশী পুনরুদ্ধার: পটাশিয়াম পেশী পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে এবং পেশী ব্যথা কমাতে পারে।

ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়ামের অভাব পেশীর উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে:

  • পেশী টান: ক্যালসিয়াম বা পটাশিয়ামের অভাব পেশী টান এবং ব্যথার কারণ হতে পারে।
  • দুর্বলতা: পেশীর দুর্বলতা অনুভব করা যেতে পারে।
  • ক্লান্তি: পেশী দ্রুত ক্লান্ত হতে পারে।
  • অনিয়ন্ত্রিত পেশী সংকোচন: ক্যালসিয়ামের অভাব টেটানি নামক অবস্থার কারণ হতে পারে, যা অস্বাভাবিকভাবে দীর্ঘস্থায়ী পেশী সংকোচন।

পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ:

  • ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: দুগ্ধজাত, সবুজ শাকসবজি, বাদাম, বীজ, মাছের হাড়
  • পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: আলু, শাকসবজি, ফল, মাংস, মাছ, দুগ্ধজাত

কিছু টিপস:

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য খান: পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান।
  • প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন: পানিশূন্যতা পেশীর কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম পেশীগুলিকে শক্তিশ

শেষকথা,

পেশী ভালো রাখতে ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম দুটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। ক্যালসিয়াম: পেশীর সংকোচনে সাহায্য করে, স্নায়ু থেকে পেশীতে সঙ্কেত পাঠায় এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। পটাশিয়াম: পেশীর কোষের ভেতরে এবং বাইরে বিদ্যুৎ ভারসাম্য রাখে, স্নায়ু সঙ্কেত পাঠায়, রক্তচাপ नियন্ত্রণ করে এবং পেশী পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়ামের অভাব পেশী টান, দুর্বলতা, ক্লান্তি এবং অস্বাভাবিক পেশী সংকোচন (টেটানি) হতে পারে। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: দুধ, সবুজ শাকসবজি, বাদাম, বীজ, মাছের হাড়। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: আলু, শাকসবজি, ফল, মাংস, মাছ, দুধ।

2 thoughts on “মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশী কোনটি ”

Leave a Reply