মৌলিক মানবিক চাহিদা বলতে কী বুঝ

মৌল মানবিক চাহিদা কি

Concept of Basic Human Needs

সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের দৈহিক বৃদ্ধি, মানসিক বিকাশ এবং সামাজিক জীবনের উৎকর্ষতা অর্জনে কিছু চাহিদা পূরণ করা জরুরি। এগুলোই মৌলিক মানবিক চাহিদা। এসব চাহিদা পূরণের মাধ্যমে মানুষের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক বিকাশ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হয়। মানবিক চাহিদা কয়টি এ চাহিদাগুলো দুই প্রকার, যেমন- ক. মৌলিক চাহিদা খ. মানবিক চাহিদা।

মৌলিক চাহিদা (Basic Needs)

মৌলিক চাহিদা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পর্কিত। এগুলোকে অনেক সময় জৈবিক চাহিদাও বলা হয়। এগুলো পূরণ করতে না পারলে মানবদেহের স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। যেমন- খাদ্য, ঘুম, যৌন চাহিদা ইত্যাদি। খাবার না খেলে মানুষের পক্ষে যেমন বেঁচে থাকা অসম্ভব, তেমনি পরিমিত ঘুম ছাড়া কেউ দিনের পর দিন জেগে থাকতে পারে না। তাই মানুষের এ চাহিদাগুলো পূরণ করা জরুরি।

মানবিক চাহিদা (Human Needs)

প্রাগৈতিহাসিক কালে মানুষ বনে-জঙ্গলে কিংবা পাহাড়ের গুহায় বসবাস করত। লজ্জা নিবারণের জন্য এ সময় তারা গাছের ছাল-বাকল, পাতা ও পাখির পালক ব্যবহার করতো। তখন মানবিক চাহিদার গুরুত্ব ছিল না। মানুষ সমাজবদ্ধভাবে বসবাস শুরু করার পর এ চাহিদার প্রয়োজনীয়তা বাড়তে থাকে। অর্থাৎ সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে জীবনযাপনের জন্য যে চাহিদাগুলোর পূরণ অপরিহার্য সেগুলোই মানবিক চাহিদা। এগুলোকে সামাজিক চাহিদাও বলা হয়। যেমন: বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, চিত্তবিনোদন, নিরাপত্তা ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ ৩ দিনে ফর্সা হওয়ার উপায় | 10 টি অজানা টিপস

মৌলিক মানবিক চাহিদা (Basic Human Needs)

মানুষের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক বিকাশের জন্য যে সব চাহিদা

ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী গর্ডন মার্শাল ১৯৫২ সালের ২০ জুন জন্মগ্রহণ করেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ চালু করার পেছনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার প্রকাশিত বইয়ের নাম “Repositioning Class Social Inequality in Industrial Societies”.

পূরণ করতে হয় তাকে মৌলিক মানবিক চাহিদা বলে। এ চাহিদা পূরণ না করলে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও চিত্তবিনোদন ইত্যাদি। প্রত্যেক মানুষের জন্য এ চাহিদাগুলো পূরণ করা আবশ্যক। এগুলো পূরণের ব্যর্থতা থেকে নিরক্ষরতা, পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যহীনতার মতো নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। উল্লেখ্য, মৌলিক চাহিদার তুলনায় মানবিক চাহিদার পরিমাণ বা সংখ্যা বেশি হয়। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে মৌলিক মানবিক চাহিদার সংজ্ঞা দিয়েছেন। এর মাঝে ডেভিড জেরি (David Jary) এবং জুলিয়া জেরি (Julia Jary) প্রণীত ‘কলিন্স সমাজবিজ্ঞান অভিধানে’ বলা হয়েছে- “মৌলিক মানবিক চাহিদা হলো এমন একটি ধারণা, যাতে সকল মানুষ তাদের মানবিক গুণাবলির কারণে মৌলিক চাহিদা হিসেবে এগুলো পূরণে অংশগ্রহণ করে। (Basic human needs is the conception that all human being share fundamental needs by virtue of their humanity)।” ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী গর্ডন মার্শাল (Gordon Marshall) এর মতে, “চাহিদা হলো এমন কিছু যাকে অপরিহার্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বিশেষ করে এমন কিছু প্রয়োজন যা কোনো ব্যক্তির, কোনো সংগঠনের বা অন্য কিছুর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অত্যাবশ্যক বলে গণ্য করা হয়।

মৌলিক মানবিক চাহিদা কয়টি | সমাজবিজ্ঞানী টোলের মতে মৌলিক মানবিক চাহিদা কত প্রকার

মার্কিন সমাজকর্মী শার্লট টোলে (Charlotte Towle) তার common Human needs গ্রন্থে ছয়টি মৌলিক চাহিদার কথা উল্লেখ করেছেন এগুলি হলে,

১। খাদ্য

২। বস্ত্র

৩। বাসস্থান

৪। শিক্ষা

৫। স্বাস্থ

৬। চিত্তবিনোদন 

মৌল মানবিক চাহিদার একটি তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর (Important  Description of Basic Human Needs)

জৈবিক চাহিদা পূরণ এবং সামাজিক মর্যাদা টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষ সবসময়ই তৎপর। এজন্য মৌলিক মানবিক চাহিদার পূরণ হওয়া জরুরি। দৈনন্দিন জীবনে বেঁচে থাকা ও সুনাগরিক হওয়ার জন্য যে সকল মৌলিক মানবিক চাহিদা প্রয়োজন, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো।

বাংলাদেশের মৌল মানবিক চাহিদা গুলোর নাম | মৌলিক মানবিক চাহিদা হিসেবে খাদ্য কেন প্রয়োজন

মৌলিক মানবিক চাহিদা হিসেবে খাদ্য কেন প্রয়োজন
মৌলিক মানবিক চাহিদা হিসেবে খাদ্য কেন প্রয়োজন

খাদ্য (Food): মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা হলো খাদ্য। একজন শিশুর জন্মের আগে থেকেই খাবারের প্রয়োজন হয়, যা সে তার মায়ের গ্রহণ করা খাবার থেকে পায়। আর জন্মগ্রহণের পর তার বেঁচে থাকা, বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্যও খাবারের দরকার হয়। পরিমিত ও সুষম খাবার মানব শরীরের বৃদ্ধি ঘটায় ও ব্যক্তিকে কর্মশক্তি দানে সাহায্য করে। এজন্য খাদ্যে ছয়টি উপাদানের উপস্থিতি জরুরি। এগুলো হলো- শর্করা, আমিষ, স্নেহ পদার্থ, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও পানি। এ উপাদানগুলো বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণ করার মাধ্যমে মানুষের শরীরে পৌঁছায়। তাই প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ না করলে মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। উদাহরণস্বরূপ মানবদেহকে গাড়ির সাথে তুলনা করা যেতে পারে। গাড়িতে যেমন প্রয়োজনীয় তেল, মোবিল না দিলে চলে না, তেমনি মানুষও দেহের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য না পেলে বাঁচতে পারে না। এক্ষেত্রে মানুষের ধর্ম, বর্ণ, সমাজ, সংস্কৃতি, সামাজিক রীতিনীতি অনুমোদিত খাদ্যকে সুষম খাদ্য হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। কেননা, নির্দিষ্ট একটি ধর্মের জন্য যে খাবার স্বীকৃত তা অন্য ধর্মের জন্য গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।

মানবজীবনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা হলো বস্ত্র
মানবজীবনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা হলো বস্ত্র

বস্ত্র (Cloth): মানবজীবনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা হলো বস্ত্র। এটি সভ্যতার প্রতীক। এটি আদিম অবস্থা থেকে মানুষকে বর্তমান সময়ের সভ্য নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। বস্ত্র ছাড়া কোনো মানুষ সমাজে বসবাস করতে পারে না। বস্ত্রহীন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কোনো মানুষ বস্তুহীন অবস্থায় বাড়িতে থাকলে কিংবা বাড়ির বাইরে বের হলে, সামাজিকভাবে তাকে হেয় প্রতিপন্ন হতে হবে। মানুষ তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বিবেচনা করবে। বস্তু একদিকে যেমন ব্যক্তিকে লজ্জা নিবারণের মাধ্যমে সমাজে বাঁচতে সাহায্য করে, অন্যদিকে নানা ধরনের রোগ থেকেও রক্ষা করে। সামগ্রিকভাবে মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য এ চাহিদার প্রয়োজন অপরিসীম।

বাসস্থান বলতে মানুষের বসবাস করার জন্য স্থায়ী আবাসনব্যবস্থাকে বোঝায়
বাসস্থান বলতে মানুষের বসবাস করার জন্য স্থায়ী আবাসনব্যবস্থাকে বোঝায়

বাসস্থান (Dwelling Place): বাসস্থান বলতে মানুষের বসবাস করার জন্য স্থায়ী আবাসনব্যবস্থাকে বোঝায়। সমাজ ও সভ্যতাকে স্থিতিশীল রূপ দেওয়ার পেছনে বাসস্থানের অবদান সবচেয়ে বেশি। পরিবার কাঠামো গড়ে ওঠার পটভূমি হলো বাসস্থান। এটি সমাজের ভিত্তি। সেই সাথে এটি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করার একটি মাধ্যম। বাসস্থানের কারণেই মানুষের প্রতি মানুষের পারস্পরিক সহানুভূতি, একাত্মতা, গোষ্ঠীবদ্ধ জীবনযাপন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। মানুষ কর্মক্ষেত্র থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিজ আবাসস্থলে ফিরে আসে। তাই সুষ্ঠু জীবনযাপন, সামাজিক নিরাপত্তা, বিপদকালে সহায়তা, গোপনীয়তা থেকে রক্ষা পেতে মানুষ বাসস্থান গড়ে তোলে।

আরও পড়নঃ সমাজকর্ম কি | সমাজকর্মের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা দিয়েছেন কে

শিক্ষাকে কেন মৌল মানবিক চাহিদা বলা হয়
শিক্ষাকে কেন মৌল মানবিক চাহিদা বলা হয়

শিক্ষাকে কেন মৌল মানবিক চাহিদা বলা হয়

শিক্ষা (Education): শিক্ষা বলতে জ্ঞান ও জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া দুটিকেই বোঝায়। সাধারণত শিশু বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পর্যবেক্ষণ ও লেখাপড়ার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন শুরু করে। তবে শিক্ষা ছাড়া সে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা অর্জন করতে পারে না। তাই, শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়। সেইসাথে নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ধারণা লাভ করার জন্য মানুষকে শিক্ষা অর্জন করতে হবে। বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক জন মিল্টন বলেন, “দেহ, মন ও আত্মার

যুগপৎ বিকাশ সাধনই হলো শিক্ষা। (Education is the harmonious development of body, mind and soul.) তাই শিক্ষাই পারে মানুষের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে। এর মাধ্যমে একজন মানুষ ব্যক্তিত্ব গঠন, মানবিক মূল্যবোধ

বাংলাদেশে মৌলিক মানবিক চাহিদা

অর্জন, সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হয়। সেই সাথে এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা আয়ত্ত করে জীবিকা উপার্জনে সক্ষম হয়ে ওঠে। এ কারণে দার্শনিক ফ্রেডারিক হার্বার্ট বলেছেন, শিক্ষা হচ্ছে মানুষের বহুমুখী প্রতিভা এবং অনুরাগের সুষম প্রকাশ ও নৈতিক চরিত্র গঠনের মাধ্যম।” শিক্ষার অভাবে অজ্ঞতা, নিরক্ষরতা, বেকারত্ব, দারিদ্রদ্র্য, পুষ্টিহীনতাসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়।

জেনে রাখো: সপ্তদশ শতাব্দীর বিখ্যাত ইংরেজ কবি ও গদ্য লেখক জন মিল্টন। তাঁর রচনাবলির মাঝে বিখ্যাত হলো “Paradise Lost”। ১৬৫৮ থেকে ১৬৪৪ সালের মধ্যে মিল্টন এই মহাকাব্যটি রচনা করেন।

মৌলিক মানবিক চাহিদা হিসেবে চিকিৎসার গুরুত্ব লেখ
মৌলিক মানবিক চাহিদা হিসেবে চিকিৎসার গুরুত্ব লেখ

মৌলিক মানবিক চাহিদা হিসেবে চিকিৎসার গুরুত্ব লেখ

স্বাস্থ্য (Health): সাধারণত স্বাস্থ্য বলতে শারীরিক সুস্থতাকে বোঝানো হয়। তবে এটি শারীরিক ও মানসিক উভয় সুস্থতাকেই নির্দেশ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, “স্বাস্থ্য বলতে শুধু রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতি বোঝায় না, বরং দৈহিক, মানসিক ও সামাজিক দিক থেকে সুস্থ অবস্থাকে বোঝানো হয়। (Health is not merely

the absence of disease or infirmity, but the state of complete physical, mental and social well-being)” প্রবাদে আছে- স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। কেননা শরীর ও মন যদি ভালো না থাকে তাহলে যত অর্থ-বিত্তই থাকুক না কেন কোনো কিছুতেই শান্তি আসে না। স্বাস্থ্যহীনতা মানুষকে কর্মহীন করে তোলে। ফলে তারা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন না। তাই বলা যায়, ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় উন্নয়ন সুস্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে।

চিত্তবিনোদন কেন মৌল মানবিক চাহিদা বলা হয়
চিত্তবিনোদন কেন মৌল মানবিক চাহিদা বলা হয়

চিত্তবিনোদন কেন মৌল মানবিক চাহিদা বলা হয়

চিত্তবিনোদন (Recreation); চিত্তবিনোদন বলতে প্রতিদিনের কাজের একঘেয়েমি রোধ, দেহ ও মনের অবসন্নতা দূর করে সজীবতা অর্জন ও মনে প্রফুল্লতা সঞ্চার করাকে বোঝায়। এটি মানুষের মনের খোরাক। খাদ্য যেমন দেহের বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করে, তেমনি চিত্তবিনোদনের ফলে কাজে উদ্দীপনা আসে। এটি মানুষকে শক্তি ও প্রেরণা জোগায়, একঘেয়েমি দূর করে। ফলে কাজ করার নতুন প্রেরণা পাওয়া যায়। দৈনন্দিন জীবনে মানুষ এত বেশি ব্যস্ত থাকে যে, মাঝে মাঝে কাজের প্রতি বিরক্তি চলে আসে। যখন কাজে মন বসে না তখনই নির্মল চিত্তবিনোদনের দরকার হয়, যা ক্লান্তি দূর করে নতুনভাবে কাজ করার উদ্যম জোগায়। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিই নয় শিশু, কিশোর ও যুবকদের জন্যও চিত্তবিনোদন দরকার। কেননা সুস্থ বিনোদন তাদের মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আর ব্যক্তি যদি বিনোদনের কোনো সুযোগ না পায় তাহলে যে কোনো খারাপ কাজে সে বা তারা লিপ্ত হয়ে পড়ে।

নিরাপত্তা (Security): সামাজিক মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা হলো সামাজিক নিরাপত্তা। সাধারণত ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণের বাইরে সংঘটিত বিভিন্ন বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতি (যেমন- অসুস্থতা, বেকারত্ব, পেশাগত দুর্ঘটনা, মৃত্যু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি) মোকাবিলায় রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত অর্থনৈতিক সহায়তামূলক কর্মসূচিকে সামাজিক নিরাপত্তা বলা হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫নং অনুচ্ছেদের (ঘ) উপ-অনুচ্ছেদে সামাজিক নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। এখানে বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত সমস্যা কিংবা বৈধব্য, মাতৃ-পিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত পরিস্থিতিতে দেশের জনগণের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। তাই মৌলিক মানবিক চাহিদা হিসেবে বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রত্যেকের সামাজিক নিরাপত্তা পাবার অধিকার রয়েছে।

শেষ কথা,

প্রকৃতপক্ষে মৌলিক মানবিক চাহিদা প্রতিটি মানুষের জীবনে অপরিহার্য। কিন্তু সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তা সমহারে পায় না। আবার দেশ-কাল স্থানভেদেও এর প্রাপ্যতা নির্ভর করে। এমন অনেক মৌলিক মানবিক চাহিদা আছে, যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পূরণ করা হয়ে থাকে।

2 thoughts on “মৌলিক মানবিক চাহিদা বলতে কী বুঝ”

Leave a Reply