payra thermal power plant – পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার পায়রা উপজেলার কলাপাড়া গ্রামে অবস্থিত একটি বিশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার এক উল্লেখযোগ্য অংশ সরবরাহ করে।

কেন্দ্রটির নির্মাণ ১৯৯৭ সালে শুরু হয় এবং ২০০৮ সালে প্রথম ইউনিট চালু হয়। বর্তমানে এটিতে তিনটি ইউনিট রয়েছে, যার প্রতিটির ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট

কেন্দ্রটি কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। কয়লা বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল থেকে ট্রেনজাহাজের মাধ্যমে পায়রাতে পরিবহন করা হয়।

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণএটি দেশের শিল্পবাণিজ্য ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে।

কেন্দ্রটি পরিবেশের উপর কিছু প্রভাব ফেলে। কয়লা পোড়ানোর ফলে বায়ু দূষণ হয় এবং গরম পানি নদীতে স্থির হয়ে জলজ পরিবেশের ক্ষতি করে।

তবে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ পরিবেশ দূষণ কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে এবং গরম পানি নদীতে স্থির হওয়া থেকে রোধ করা হচ্ছে।

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রএটি দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার এক উল্লেখযোগ্য অংশ সরবরাহ করে এবং অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ পরিবেশ দূষণ কমাতে সচেষ্ট এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
  • অবস্থান: পটুয়াখালী জেলার পায়রা উপজেলার কলাপাড়া গ্রাম
  • নির্মাণ শুরুর বছর: ১৯৯৭
  • প্রথম ইউনিট চালুর বছর: ২০০৮
  • ইউনিট সংখ্যা:
  • ক্ষমতা (প্রতি ইউনিট) 

আরও পড়ুনঃ ৬০ টি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী বাংলা সাহিত্যের MCQ প্রশ্ন ও উত্তর

 

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব গুলি কি কি
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব গুলি কি কি

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব গুলি কি কি? 

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এর কিছু নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে।

অর্থনৈতিক প্রভাব:

  • ইতিবাচক:
    • বিদ্যুৎ সরবরাহ: কেন্দ্রটি দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার এক উল্লেখযোগ্য অংশ সরবরাহ করে, যা শিল্প, বাণিজ্য এবং গৃহস্থালিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে।
    • অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
    • কর্মসংস্থান: কেন্দ্রটিতে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
  • নেতিবাচক:
    • জ্বালানি খরচ: কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত কয়লা আমদানি করতে হয়, যার ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়।
    • পরিবহন খরচ: কয়লা পরিবহনের জন্য প্রচুর ট্রেন ও জাহাজ ব্যবহার করা হয়, যার ফলে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পায়।
    • দূষণ নিয়ন্ত্রণ খরচ: পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়।

পরিবেশগত প্রভাব:

  • ইতিবাচক:
    • বিকল্প জ্বালানি: কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতাকে কমিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিকল্প সরবরাহ করে।
    • গ্রিড স্থিতিশীলতা: কেন্দ্রটি জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • নেতিবাচক:
    • বায়ু দূষণ: কয়লা পোড়ানোর ফলে বায়ুতে ধোঁয়া, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং ছাই কণা নির্গত হয়, যা বায়ু দূষণের প্রধান কারণ।
    • জল দূষণ: কেন্দ্র থেকে নির্গত গরম পানি নদীতে প্রবেশ করলে জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটে।
    • শব্দ দূষণ: কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন শব্দ দূষণ স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিরক্তিকর হতে পারে।
    • ভূমি অধিগ্রহণ: কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রচুর পরিমাণে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, যার ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে।

অতএব, বলা যায় যে, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণতবে **এর কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে যেগুলি আমরা মেইনটেইন করে চললে আমরা উন্নয়ন মূলক দিকগুলির সুবিধায় বেশি পেতে পারি। 

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনটি
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনটি

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনটি? 

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হল পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

এটি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পায়রায় অবস্থিত। ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই কেন্দ্রটি দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১০% সরবরাহ করে।

২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসা এই কেন্দ্রটি আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল (USC) প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মিত, যা পরিবেশ দূষণ কমাতে সাহায্য করে।

তবে, কয়লা সংকটের কারণে ২০২৩ সালের ৫ জুন থেকে কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে। ২৫ জুলাই থেকে আবারও চালু করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের বৃহত্তম তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ২০২০ সালে পায়রা চালু হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম কেন্দ্রে পরিণত হয়।

পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন কত টন কয়লা লাগে?

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার টন কয়লা লাগে। এই পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র টি চীনের রাষ্ট্রয়াত্ত সংস্থা আর বাংলাদেশের নর্থওয়েষ্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি যৌথ উদ্দ্যেগে পরিচালিত হচ্ছে এবং কার্যক্রম চলছে। 

বাংলাদেশের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়টি? 

বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ১৪৫ টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু আছে। এই কেন্দ্রগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩০,২২৭ মেগাওয়াট।

তালিকাভুক্ত কিছু প্রধান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র:

  • পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (পটুয়াখালী): ১৩২০ মেগাওয়াট
  • বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (গাজীপুর): ১২১৩ মেগাওয়াট
  • শিবালীয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (নরসিংদী): ১০০০ মেগাওয়াট
  • সিলেট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (সিলেট): ৫২০ মেগাওয়াট
  • Meghnaghat Power Plant (Munshiganj): 450 megawatt
  • Ashuganj Power Plant (Brahmanbaria): 410 megawatt
  • Ghorasal Power Plant (Dinajpur): 300 megawatt
  • Gopalganj Power Plant (Gopalganj): 220 megawatt
  • Sidhirganj Power Plant (Narayanganj): 210 megawatt

উল্লেখ্য, এই তালিকাটি সম্পূর্ণ নয়। ছোট আকারের কিছু ক্যাপ্টিভ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি চালিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নতুন কিছু তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এই নতুন কেন্দ্রগুলো চালু হলে দেশের বিদ্যুৎ সংকট অনেকাংশে দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ মেয়েদের ছবি | সুন্দর মেয়ে প্রোফাইল পিক | কিউট মেয়েদের প্রোফাইল পিক

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয় কোথায়?

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল ঢাকার আহসান মঞ্জিল অঞ্চলে। ১৯০১ সালের ৭ ডিসেম্বর ব্রিটিশ নাগরিক মি. বোল্টন এখানে প্রথম সুইচ টিপে বিদ্যুৎ সরবরাহের সূচনা করেন।

আহসানউল্লাহ নামক একজন নবাব তৎকালীন ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক এবং আহসান মঞ্জিলসহ কয়েকটি অভিজাত ভবনকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার আওতায় এনেছিলেন। অক্টাভিয়াস স্টিল নামক একটি কোম্পানি এই কাজ পরিচালনা করেছিল।

তবে, সমগ্র ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয় অনেক বছর পরে। ১৯৫১ সালে ঢাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

আজ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। দেশের বেশিরভাগ অংশেই বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সরবরাহ ব্যবস্থা আরও উন্নত করার জন্য নিয়মিত কাজ করছে।

রূপপুর নিউক্লিয়ার পিপিতে কোন ধরনের চুল্লি ব্যবহার করা হয়?

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে VVER-1200 ধরনের চুল্লি ব্যবহার করা হবে। এটি রাশিয়ান ডিজাইনের একটি তৃতীয় প্রজন্মের প্রেসurized water reactor (PWR)। VVER-1200 তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং দক্ষ একটি চুল্লি বলে পরিচিত। এটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্যান্য ধরনের চুল্লির চেয়ে বেশি কার্যকর।

VVER-1200 চুল্লির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:

  • ক্ষমতা: ১২০০ মেগাওয়াট
  • জ্বালানি: ইউরেনিয়াম
  • ঠান্ডা করার পদ্ধতি: প্রেসurized water
  • নিরাপত্তা: VVER-1200 চুল্লি অনেক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে একটি দ্বিগুণ সুরক্ষা প্রক্রিয়া যা চুল্লির ভেতরে চাপ এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও চুল্লির চারপাশে একটি মজবুত কংক্রিট আবরণ রয়েছে যা কোনও দুর্ঘটনার সময় রেডিওধর্মী উপাদান বেরিয়ে পড়া থেকে রোধ করে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এই কেন্দ্র চালু হলে দেশের বিদ্যুৎ সংকট অনেকাংশে দূর হবে। এছাড়াও এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পরিশেষে, আমরা বুঝতে পারলাম যে,  Payra thermal power plant – পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কি কি সুবিধা রয়েছে এবং যা আমাদের দেশের জন্য কত টা গুরুত্ব এছাড়া জানতে পারলাম অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্যসমূহ। আসা করি আজকের এই তথ্যটি আপনাদের জ্ঞানের ভাণ্ডারকে বৃদ্ধি করবে। 

2 thoughts on “payra thermal power plant – পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র”

Leave a Reply