কোমরের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন, ভুল ভঙ্গিতে বসা বা দাঁড়ানো, অতিরিক্ত ওজন, পেশীতে টান, অথবা আঘাত। কোমরের ব্যথা কমাতে ব্যায়াম একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে কোমরের পেশী শক্তিশালী হয়, নমনীয়তা বৃদ্ধি পায় এবং ব্যথা কমে। চলুন জেনে নি কি কি বেয়াম করতে হবে আমাদের।
কোমরের ব্যথা কমাতে কিছু সহজ ব্যায়াম :
- হাঁটু মোড়ানো:
- পিঠে শুয়ে হাঁটু ভেঙে পা মেঝেতে রাখুন।
- ধীরে ধীরে মাথা ও কাঁধ মেঝে থেকে উপরে তুলুন, হাঁটু সোজা রাখুন।
- 5 সেকেন্ড ধরে রেখে আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনুন।
- 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
- পা সোজা করে তোলা:
- পিঠে শুয়ে দুই পা সোজা করে উপরে তুলুন।
- 5 সেকেন্ড ধরে রেখে আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনুন।
- 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
- কোমর ঘোরানো:
- পিঠে শুয়ে হাঁটু ভেঙে পা মেঝেতে রাখুন।
- ধীরে ধীরে দুই পা একসাথে ডান দিকে ঘোরান, 5 সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- এরপর বাম দিকে ঘোরান, 5 সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- 10 বার করে পুনরাবৃত্তি করুন।
✌✌আরও পড়ুনঃ থ্যালাসেমিয়া রোগী কতদিন বাঁচে Thalassemia Patient
- বিড়াল-বাঘের ভঙ্গি:
- চার হাত-পায়ে মেঝেতে ভর দিয়ে হাঁটু হাতের কাছে এবং মাথা নিচে রাখুন।
- শ্বাস নিতে মাথা ও লেজ উপরে তুলুন, পিঠ কমিয়ে মেঝের দিকে নামিয়ে আনুন।
- শ্বাস ছাড়তে মাথা ও লেজ নিচে নামিয়ে আনুন, পিঠ উপরে তুলুন।
- 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
- সুপ্ত বজ্রাসন:
- পিঠে শুয়ে দুই পা একসাথে মেঝেতে রাখুন।
- হাত পাশে রাখুন।
- ধীরে ধীরে হাঁটু ভেঙে দুই পা বুকে টেনে আনুন।
- 5 সেকেন্ড ধরে রেখে আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনুন।
- 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
ব্যায়াম করার সময় মনে রাখবেন:
- ব্যথা অনুভব করলে ব্যায়াম বন্ধ করুন।
- ব্যায়ামের পূর্বে ও পরে হালকা গরম ও ঠান্ডা স্ট্রেচিং করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- প্রয়োজনে একজন ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিন।
কোমরের ব্যথা ছাড়াও, সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু টিপস:
- সঠিক ভঙ্গিতে বসুন ও দাঁড়ান।
- অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
✌✌আরও পড়ুনঃ মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায়
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়:
কোমর ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ব্যথা উপশম এবং দ্রুত সুস্থতা লাভের জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
মনে রাখবেন:
- এই উপায়গুলো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নাও হতে পারে।
- গুরুতর ব্যথা বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায় :
১. বিশ্রাম:
- ব্যথা উপশমের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম গুরুত্বপূর্ণ।
- কঠিন কাজপরিহার করুন এবং দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে বসে থাকা এড়িয়ে চলুন।
২. বরফ সেঁক:
- বরফ ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- একটি পরিষ্কার কাপড়ে বরফ জড়িয়ে ব্যথার স্থানে ১৫-২০ মিনিট করে দিনে কয়েকবার সেঁক দিন।
৩. গরম সেঁক:
- পেশী শিথিল করতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে গরম সেঁক ব্যবহার করা যেতে পারে।
- একটি হিটিং প্যাড ব্যবহার করুন অথবা গরম জলের একটি বোতল ব্যথার স্থানে ১৫-২০ মিনিট করে দিনে কয়েকবার সেঁক দিন।
৪. হলুদ:
- হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- দুধে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন অথবা হলুদ দিয়ে রান্না করুন।
৫. আদা:
- আদা ব্যথা উপশম এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- আদা চা পান করুন অথবা খাবারে আদা ব্যবহার করুন।
৬. মেথি:
- মেথির বীজে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে।
- এক চা চামচ মেথি বীজ রাতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে বীজগুলো ছেঁকে নিন এবং পানি পান করুন।
৭. লবঙ্গের তেল:
- লবঙ্গের তেলে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যানালজেসিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে।
- ব্যথার স্থানে লবঙ্গের তেল ম্যাসাজ করুন।
৮. ম্যাসাজ:
- নিয়মিত ম্যাসাজ পেশী শিথিল করতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে।
- একজন পেশাদার ম্যাসাজ থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে পারেন অথবা ঘরে বসে নিজেই ম্যাসাজ করতে পারেন।
৯. যোগব্যায়াম:
- কিছু নির্দিষ্ট যোগব্যায়াম কোমরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- একজন যোগব্যায়াম শিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে উপযুক্ত যোগব্যায়াম অনুশীলন কর
কোমরের ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট
কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য কোন ট্যাবলেট খাবেন তা জানতে হলে নিচে ভাল করে পড়ুন আশা করি আপনের উপকার হবে ।
কোমরের ব্যথা কারণ:
- কোমরের ব্যথার অনেকগুলি কারণ থাকতে পারে এবং কারণের উপর নির্ভর করে, বিভিন্ন ধরণের ওষুধ বা চিকিৎসা কার্যকর হতে পারে।
- কিছু ওষুধের গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তাই একজন ডাক্তার আপনার জন্য কোন ওষুধটি নিরাপদ এবং কার্যকর তা নির্ধারণ করতে পারবেন।
- আপনার অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থা বা আপনি যে ওষুধগুলি গ্রহণ করছেন তার উপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট ওষুধগুলি আপনার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে।
একজন ডাক্তার আপনার কোমরের ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে এবং আপনার জন্য সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা প্রস্তাব করতে সক্ষম হবেন।
তবে, কিছু সাধারণ ওষুধ যা সাধারণত কোমরের ব্যথার জন্য ব্যবহৃত হয় সেগুলির মধ্যে রয়েছে:
- ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) ব্যথানাশক:
- আইবুপ্রোফেন (এডভিল, মোট্রিন)
- অ্যাসিটামিনোফেন (টাইলেনল)
- ন্যাপ্রোক্সেন (অ্যালেভ)
- প্রেসক্রিপশন ব্যথানাশক:
- কোডিন
- হাইড্রোকোডোন
- অক্সিকোডোন
- পেশী শিথিলকারী:
- সাইক্লোবেনজাপ্রাইন (ফ্লেক্সেরিল)
- মেথোকার্বামল (রোব্যাক্সাম্যান)
- অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট:
- ডুলোক্সেটিন (সাইম্বাল্টা)
- অ্যামিট্রিপ্টিলাইন (এলাভিল)
মনে রাখবেন, এটি কেবলমাত্র তথ্যমূলক উদ্দেশ্যে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ। আপনার কোমরের ব্যথার জন্য সঠিক চিকিৎসা পেতে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।
কোমর ব্যথা কি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ?
হ্যাঁ, কোমর ব্যথা প্রেগন্যান্সির একটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথার কিছু কারণ :
- হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায়, রিলাক্সিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয় যা শরীরের লিগামেন্টগুলিকে শিথিল করে, যার ফলে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
- ওজন বৃদ্ধি: গর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধি পেলে কোমরের উপর চাপ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে ব্যথা হতে পারে।
- পেটের পেশীতে টান: গর্ভবতী হওয়ার সাথে সাথে, পেটের পেশীগুলি প্রসারিত হয় এবং টানতে পারে, যার ফলে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
- শরীরের ভারসাম্য পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায়, গর্ভের বাড়ন্ত ওজনের কারণে শরীরের ভারসাম্য পরিবর্তিত হয়, যার ফলে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
- খারাপ ভঙ্গি: দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানো, বসা বা হাঁটা, অথবা ভুল ভঙ্গিতে শোয়া থাকলে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
কোমর ব্যথা ছাড়াও, গর্ভাবস্থায় আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে:
- মিষ্টি বমি বমি ভাব
- বুকে জ্বালাপোড়া
- বারবার প্রস্রাব হওয়া
- অবসাদ
- মেজাজের পরিবর্তন
আপনি যদি মনে করেন যে আপনি গর্ভবতী হতে পারেন এবং কোমর ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। তারা একটি গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করতে পারবেন এবং আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে সাহায্য করবেন।
কোমর ব্যথা উপশম করার জন্য কিছু টিপস:
- বিশ্রাম নিন: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে বসা বা দাঁড়ানো এড়িয়ে চলুন।
- ব্যায়াম করুন: নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, যেমন হাঁটা বা সাঁতার কাটা, কোমরের পেশী শক্তিশালী করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- সঠিক ভঙ্গিতে বসুন ও দাঁড়ান: সোজা হয়ে বসুন এবং দাঁড়ান, এবং আপনার পিঠকে সমর্থন করার জন্য একটি কম্বল বা বালিশ ব্যবহার করুন।
- গরম বা ঠান্ডা সেঁক ব্যবহার করুন: ব্যথার স্থানে 15-20 মিনিটের জন্য গরম বা ঠান্ডা সেঁক ব্যবহার করুন।
- ম্যাসাজ করুন: একজন ম্যাসাজ থেরাপিস্ট আপনার কোমরের পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেন।
- ওষুধ: আপনার ডাক্তার ব্যথা উপশম করার জন্য ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন।
পিঠে ব্যথার জন্য কোন ব্যায়াম ভালো?
পিঠের ব্যথা উপশম এবং পেশী শক্তিশালী করার জন্য কিছু কার্যকর ব্যায়াম রয়েছে।
মনে রাখবেন:
- ব্যথা অনুভব করলে ব্যায়াম বন্ধ করুন।
- ব্যায়ামের পূর্বে ও পরে হালকা গরম ও ঠান্ডা স্ট্রেচিং করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- প্রয়োজনে একজন ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিন।
কিছু কার্যকর ব্যায়াম :
১. সুপ্ত মার্জারী পোজ (Cat-Cow Pose):
- চার হাত-পায়ে মেঝেতে ভর দিয়ে হাঁটু হাতের কাছে এবং মাথা নিচে রাখুন।
- শ্বাস নিতে মাথা ও লেজ উপরে তুলুন, পিঠ কমিয়ে মেঝের দিকে নামিয়ে আনুন (বিল)।
- শ্বাস ছাড়তে মাথা ও লেজ নিচে নামিয়ে আনুন, পিঠ উপরে তুলুন (বাঘ)।
- 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
২. পা সোজা করে তোলা (Leg Raises):
- পিঠে শুয়ে দুই পা সোজা করে উপরে তুলুন।
- 5 সেকেন্ড ধরে রেখে আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনুন।
- 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
৩. কোমর ঘোরানো (Spinal Twist):
- পিঠে শুয়ে হাঁটু ভেঙে পা মেঝেতে রাখুন।
- ধীরে ধীরে দুই পা একসাথে ডান দিকে ঘোরান, 5 সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- এরপর বাম দিকে ঘোরান, 5 সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- 10 বার করে পুনরাবৃত্তি করুন।
৪. সুপ্ত বজ্রাসন (Reclining Thunderbolt Pose):
- পিঠে শুয়ে দুই পা একসাথে মেঝেতে রাখুন।
- হাত পাশে রাখুন।
- ধীরে ধীরে হাঁটু ভেঙে দুই পা বুকে টেনে আনুন।
- 5 সেকেন্ড ধরে রেখে আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনুন।
- 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।
৫. প্ল্যাঙ্ক (Plank):
- মুখ থুপি করে মেঝেতে হাত ও পায়ের আঙুল ভর দিয়ে শরীর সোজা করে রাখুন।
- 30 সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- বিশ্রাম নিন এবং আবার করুন।
- ধীরে ধীরে ধরে রাখার সময় বাড়ান।
এছাড়াও, কিছু যোগব্যায়াম পিঠের ব্যথা উপশমে সাহায্য করতে পারে।
- বজ্রাসন (Thunderbolt Pose): এটি বসার একটি ভঙ্গি যা পিঠের পেশীগুলিকে প্রসারিত করে এবং মেরুদণ্ডকে সারিবদ্ধ করতে সাহায্য করে।
- সেতুবন্ধাসন (Bridge Pose): এটি একটি পিঠের পেশী শক্তিশালী করার ভঙ্গি যা পিঠের নীচের অংশকেও প্রসারিত করে।
- বালাসনা (Child’s Pose): এটি একটি বিশ্রামমূলক ভঙ্গি যা পিঠের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
শেষ কথা,
আজকের পোস্ট টি যদি আপনার ভাল লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং একটি সুন্দর কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
Related Posts:
Sumon is a health specialist and sociologist dedicated to improving community well-being. With expertise in public health and social dynamics, HE has led numerous health initiatives and conducted impactful research. Passionate about fostering healthier communities through informed, compassionate care, Sumon combines knowledge and empathy to create holistic solutions.
1 thought on “কোমরের ব্যথা কমানোর উপায় ব্যায়াম | 10 Way To Reduce Back Pain”