জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম

💖ইসলামের ইতিহাসে বেশ কয়েকজন মহিলা সাহাবী আছেন যাদের জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।💖

তাদের মধ্যে কয়েকজন উল্লেখযোগ্য নাম নিচে বর্ণনা করা হল:

১. খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রা.): নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর স্ত্রী এবং ইসলামের প্রথম মহিলা। তিনি ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী এবং নবী (সাঃ)-এর প্রচারণায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

২. আয়েশা বিনতে আবু বকর (রা.): নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর স্ত্রী এবং হাদিসের একজন গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনাকারী। তিনি ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমতী মহিলা এবং তিনি নবী (সাঃ)-এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী ছিলেন।

৩. ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ (রা.): নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এবং খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রা.)-এর কন্যা। তিনি ছিলেন “জান্নাতের মহিলাদের নেত্রী” হিসেবে পরিচিত এবং তিনি তার পিতার প্রতি অত্যন্ত ভক্তিমান ছিলেন।

৪. জয়নব বিনতে আলী (রা.): ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বোন এবং কারবালা ট্র্যাজেডির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একজন সাহসী এবং বুদ্ধিমতী মহিলা এবং তিনি তার ভাই এবং অন্যান্য নিপীড়িতদের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি করেছিলেন।

৫. রুকাইয়া বিনতে আলী (রা.): ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বোন এবং কারবালা ট্র্যাজেডির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একজন দয়ালু এবং সহানুভূতিশীল মহিলা এবং তিনি যুদ্ধে আহতদের যত্ন নিয়েছিলেন।

৬. উম্মু সালমা (রা.): নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর স্ত্রী এবং একজন গুরুত্বপূর্ণ সাহাবী। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক এবং দাতব্য মহিলা এবং তিনি নবী (সাঃ)-এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী ছিলেন।

৭. উম্মু হাবিবা (রা.): নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর স্ত্রী এবং একজন গুরুত্বপূর্ণ সাহাবী। তিনি ছিলেন একজন জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমতী মহিলা এবং তিনি নবী (সাঃ)-এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী ছিলেন।

৮. উম্মু আয়মান (রা.): নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর দুধমা। তিনি ছিলেন একজন দয়ালু এবং সহানুভূতিশীল মহিলা এবং তিনি নবী (সাঃ)-এর শৈশবের যত্ন নিয়েছিলেন।

৯. সাফিয়া বিনতে হুয়াই (রা.): নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর স্ত্রী। 

১০. আসমা বিনতে যায়েদ (রা.): নবী মুহাম্মদ (সা.) এর সাহাবী এবং মুসলিম উম্মাহর জননী।

১১. উম্মু সালমা (রা.): নবী মুহাম্মদ (সা.) এর স্ত্রী এবং একজন বিখ্যাত সাহাবী।

১২. রুকায়া বিনতে হুসাইন (রা.): নবী মুহাম্মদ (সা.) এর নাতি এবং ইমাম হুসাইন (রা.) এর কন্যা।

১৩. জয়নব বিনতে হুসাইন (রা.): নবী মুহাম্মদ (সা.) এর নাতি এবং ইমাম হুসাইন (রা.) এর কন্যা।

আরও পড়ুনঃ ফেসবুক স্ট্যাটাস ক্যাপশন | ৫০০+ ভালবাসার রোমান্টিক ক্যাপশন 

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করা কঠিন কারণ হাদিসে তাদের সংখ্যা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

তবে, কিছু হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, বেশ কিছু মহিলা সাহাবী ছিলেন যাদের জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল।

এছাড়াও, আরও অনেক মহিলা সাহাবী ছিলেন যাদের জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হয়।

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম

কিছু হাদিসের উল্লেখ:

  • সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে: “নবী (সা.) বলেছেন, ‘পুরুষদের চেয়ে নারীদের সংখ্যা কম হওয়ার কারণ হলো, জান্নাতের সুসংবাদ পুরুষদের চেয়ে বেশি দেওয়া হয়।'”
  • সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে: “নবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়িয়ে আছি এবং নারীদের সংখ্যা পুরুষদের চেয়ে কম দেখে বললাম, ‘তোমাদের কী হয়েছে?’ তারা বলল, ‘আমরা তোমার উপর ঈমান এনেছি এবং তোমার রিসালাত মেনে নিয়েছি।’ আমি বললাম, ‘তোমাদের বিপথগামীদের সংখ্যা কত?’ তারা বলল, ‘আমরা জানি না।’ আমি বললাম, ‘তোমার ঘরের নারীদের মধ্যে বিপথগামীদের সংখ্যা তোমাদের পুরুষদের চেয়ে বেশি।'”

উল্লেখ্য যে, জান্নাতের সুসংবাদ কেবলমাত্র এই মহিলা সাহাবীদের জন্যই সীমাবদ্ধ নয়। ঈমানের সাথে সৎকর্ম সম্পন্ন করে যেকোনো মুসলিম নারী জান্নাতের যোগ্য হতে পারে।

 

💖জান্নাতে মেয়েদের জন্য কি কি নিয়ামত থাকবে💖

জান্নাতে মেয়েদের জন্য অসংখ্য নিয়ামত ও আনন্দের অপেক্ষা করছে। ইসলামে জান্নাতের বর্ণনা অনেক বিস্তৃত, তবে মেয়েদের জন্য কিছু বিশেষ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে:

অসীম সৌন্দর্য:

  • সুন্দর বাগান: মনোরম ফুল, সবুজ গাছপালা, মিষ্টি সুগন্ধি, এবং মৃদু বাতাসে ভরা অসাধারণ বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ।
  • সুন্দর প্রাসাদ: মুক্তা, লাল মরীচা, এবং সোনা দিয়ে তৈরি সুন্দর প্রাসাদে বসবাস।
  • সুন্দর পোশাক: রঙিন, মসৃণ, এবং সুগন্ধিযুক্ত পোশাকের অফুরন্ত সরবরাহ।
  • সুন্দর গহনা: মুক্তা, লাল মরীচা, এবং সোনার তৈরি অপূর্ব সৌন্দর্যের গহনা।

অসীম সুখ:

  • সুখের অনুভূতি: কোনো দুঃখ, কষ্ট, বা হতাশার অনুভূতি ছাড়াই চিরস্থায়ী সুখের অবস্থা।
  • সুন্দর সঙ্গ: পরিবার, বন্ধুবান্ধব, এবং সৎ নারীদের সঙ্গ।
  • সুস্বাদু খাবার: পৃথিবীর সকল সুস্বাদু খাবারের অফুরন্ত সরবরাহ।
  • সুমিষ্ট পানীয়: মধু, দুধ, এবং বিভিন্ন সুস্বাদু পানীয়ের অফুরন্ত সরবরাহ।
  • শারীরিক সৌন্দর্য: চিরকালীন যৌবন এবং অসাধারণ সৌন্দর্য।
  • মানসিক সুস্থতা: জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা, এবং ঈমানের পরিপূর্ণতা।

অন্যান্য:

  • আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ: আল্লাহর দিব্য দর্শন এবং তাঁর সান্নিধ্য লাভের সুযোগ।
  • ফেরেশতাদের সাথে সঙ্গ: আল্লাহর নির্দেশ পালনকারী ফেরেশতাদের সাথে সঙ্গ।
  • শান্তিপূর্ণ পরিবেশ: কোনো বিবাদ, মতবিরোধ, বা অপরাধ ছাড়াই চিরস্থায়ী শান্তির পরিবেশ।
  • অনন্তকাল: মৃত্যুর ভয় ছাড়াই চিরস্থায়ী জীবন।

উল্লেখ্য যে, জান্নাতের সুখ-সুবিধা কেবলমাত্র এই তালিকায় সীমাবদ্ধ নয়। ঈমানের সাথে সৎকর্ম সম্পন্ন করে যেকোনো মুসলিম নারী জান্নাতের যোগ্য হতে পারে এবং আল্লাহ তাদের জন্য অকল্পনীয় নিয়ামত ও আনন্দের ব্যবস্থা করেছেন।

 

সাহাবী কারা?

সাহাবী হওয়ার জন্য, একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে জীবদ্দশায় দেখা এবং মুসলিম হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল। সাহাবী হওয়ার জন্য, একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে জীবদ্দশায় দেখতে হয়েছিল এবং মুসলিম হিসেবে মারা যেতে হয়েছিল।

কতজন সাহাবী ছিলেন তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না, তবে অনুমান করা হয় লক্ষাধিক সাহাবী ছিলেন। সাহাবীদের মধ্যে ছিলেন পুরুষ, মহিলা, গরিব, ধনী, শাসক, সৈনিক, ব্যবসায়ী, কৃষক, শিক্ষক ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।

সাহাবীরা ইসলামের প্রচার ও প্রসার-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর বাণী ও কর্ম-কে মুসলিম উম্মাহর কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন এবং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন। সাহাবীরা মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তাদের জীবন, বাক্য এবং কর্ম মুসলিমদের জন্য অনুসরণের আদর্শ।

সাহাবীদের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ কুরআনে বলেছেন:

“আর তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা সত্যের সাক্ষ্য দেয় এবং তারা সত্যকে গ্রহণ করে।” ([আল-কুরআন ৯:৭৪])

হাদীসেও সাহাবীদের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন: আমার সাহাবীরা নক্ষত্রের মতোযে তারা তুমি অনুসরণ করবে সে তোমাকে জannat-এর পথ দেখাবে।” ([সহীহ বুখারী])

সাহাবীদের কিছু বিখ্যাত নাম

  • আবু বকর
  • উমর
  • উসমান
  • আলী
  • তালহা
  • জুবায়র
  • আব্দুর রহমান ইবনে আউফ
  • সা’দ ইবনে ওয়াক্কাস
  • আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ
  • আয়েশা
  • ফাতিমা
  • খাদিজা

 

৪১ জন মহিলা সাহাবীদের নামের তালিকা 

১. আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) 

২. আসমা বিনতে যায়েদ (রা.) 

৩. খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রা.) 

৪. ফাতিমা জাহরার (রা.) 

৫. উম্মু সালমা (রা.) 

৬. রুকায়া বিনতে হুসাইন (রা.) 

৭. জয়নব বিনতে হুসাইন (রা.) 

৮. আসিয়া বিনতে মুযাহিম (রা.) 

৯. উম্মু হারাম রাফিদা (রা.) 

১০. উম্মু খালিদ (রা.) 

১১. উম্মু সুলাইম (রা.) 

১২. উম্মু ঈসা (রা.) 

১৩. উম্মু হানি (রা.) 

১৪. উম্মু সা’দ (রা.) 

১৫. উম্মু ‘আবদুল্লাহ (রা.) 

১৬. উম্মু ‘আমর (রা.) 

১৭. উম্মু ‘আয়েশা (রা.) 

১৮. উম্মু ‘উমর (রা.) 

১৯. উম্মু ‘উবাইদ (রা.) 

২০. উম্মু ‘উসাইদ (রা.) 

২১. উম্মু ‘উমরাহ (রা.) 

২২. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন মালিক (রা.) 

২৩. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আব্বাস (রা.) 

২৪. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন মস’উদ (রা.) 

২৫. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আবদুল্লাহ (রা.)

 ২৬. উম্মু ‘আব্দুর রহমান বিন ‘আউফ (রা.) 

২৭. উম্মু ‘আব্দুর রহমান বিন ‘আব্বাস (রা.) 

২৮. উম্মু ‘আব্দুর রহমান বিন ‘আবদুল্লাহ (রা.) 

২৯. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আমর (রা.) 

৩০. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘উবাইদ (রা.) 

৩১. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘উমর (রা.) 

৩২. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘উসাইদ (রা.) 

৩৩. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন মখলফ (রা.) 

৩৪. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আব্দুল-‘আজিজ (রা.) 

৩৫. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন আবী ‘আউফ (রা.) 

৩৬. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আব্বাস (রা.) 

৩৭. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন মালিক (রা.) 

৩৮. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন মস’উদ (রা.) 

৩৯. উম্মু ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আবদুল্লাহ (রা.) 

৪০. উম্মু ‘আব্দুর রহমান বিন ‘আউফ (রা.) 

৪১. উম্মু ‘আব্দুর রহমান বিন ‘আব্বাস (রা.) 

শেষকথা,

আজকের এই পোস্টে যতজন জান্নাতী মহিলা সাহাবীদের নাম প্রকাশ করলাম আসা করি এগুলি জানতে পেরে আপনার অনেক উপকৃত হবেন এবং ইসলামকে জানতে পারলেন, লিখার ভিতর কোনো ভূল ত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন পাঠকবৃন্দ। 

তথ্যসূত্র:

1 thought on “জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম”

Leave a Reply