তাহলে চলুন জেনে নেই কিডনির বিভিন্ন সমস্যা এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে।
কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয়
- ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়া। যেমন- ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি ইত্যাদি ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়া।
- কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তির প্রতিদিন ন্যুনতম ৭-৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কারন পানি একদিকে আমাদের দেহ হাইড্রেটেড রাখে এবং অন্যদিকে কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- রসুনে অনেক বেশি পরিমানে এলিসিন, এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, এন্টি ফাংগাল উপাদান বিদ্যমান থাকে। যা আমাদের কিডনির বিভিন্ন সমস্যা সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
- কিডনির সমস্যায় আমরা হলুদ খেতে পারি। কারন হলুদে সবথেকে বেশি পরিমানে এন্টি-ফাংগাল উপাদান বিদ্যমান থাকে। আর এই উপাদান আমাদের কিডনিতে হওয়া বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- আদা তে জিনজেরোলস নামক উপাদান বিদ্যমান থাকে। যা কিডনি বা দেহের অন্যান্য অঙ্গ থেকে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কিডনি সমস্যার জন্য আমরা আদা খেতে পারি।
- আপেল এ থাকা এসি কিডনিতে ব্যাক্টেরিয়া জন্মানো থেকে দূরে রাখে। যার ফলে আমাদের কিডনি সুস্থ থাকে।
- কিডনি সুস্থ রাখতে আমরা বিভিন্ন ধরনের হারবাল চা খেতে পারি।
- এপেল সিডার ভিনেগার এ বিভিন্ন উপাদান এর মধ্যে ম্যালিক এসিড এবং এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান বিদ্যমান থাকে। যা আমাদের কিডনির ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।
- এলোভেরা আমাদের দেহ থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। এতে করে আমাদের শরীর ক্ষতিকর টক্সিন থেকে দূরে থাকে এবং কিডনি সুস্থ থাকে।
- বেকিং সোডা আমাদের দেহে বাইকারবোনেট লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে। যার কারনে আমাদের কিডনির কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। এর ফলে আমাদের কিডনি সুস্থ থাকে।
ডায়ালাইসিস করলে কি কিডনি ভালো হয়
- ডায়ালাইসিস করার পরে একজন রোগীর অনেক বেশি পরিমানে আমিষ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
- ডায়ালাইসিস করার পরে কিডনিতে যদি ফসফেট থেকে যায়, তাহলে তা নিষ্কাশনের জন্য আলাদা করে ওষুধ সেবন করতে হয়।
- ডায়ালাইসিস করার পরে অনেক সময় রোগীর দেহে আয়রনের এবং রক্তের পরিমান কমে যায়। এই অবস্থায় আয়রন এবং রক্তের প্রয়োজন পুরনে বাইরে থেকে ইঞ্জেকশন এবং আয়রনের ওষুধ নেওয়া হয়। তবে তা শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
- ডায়ালাইসিস রোগীদের প্রতিদিন নিয়ম করে এরোবিক ব্যায়াম করতে হয়।
- খাবারে সময় এক্সট্রা করে লবন নেওয়া যাবে না।
- কৌটজাত বিভিন্ন খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
- হেপারিন এর ব্যবহার করতে হয়।
- একজন ডায়ালাইসিস রোগীর অনেক বেশি পরিমানে সবুজ শাকসব্জি খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
আরো দেখুনঃ সুস্থ মানুষের প্লাটিলেট কত থাকে । বিস্তারিত উত্তর জানতে পড়ুন
কিডনি রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার
কিডনি রোগের কারন
- কম পরিমানে পানি পান করা
- অনেক বেশি পরিমানে ধুমপান করা
- এলকোহল জাতীয় জিনিস সেবন করা।
- ফরমালিন যুক্ত খাবার খাওয়া
- ফ্রিজে সংরক্ষন করা খাবার খাওয়া
- বিষযুক্ত খাবার খাওয়া ইত্যাদি।
কিডনি রোগের লক্ষণ
- প্রসাব অনেক কম বা বেশি পরিমানে হয়ে থাকে।
- প্রসাবের সাথে রক্ত বা পুজ বের হয়ে থাকে।
- আমাদের দেহের ওজন অতিরিক্ত পরিমানে কমে যায়।
- শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুলে যায়। ফোলা স্থানে পানি জমে।
- যেকোনো কাজের প্রতি মনোযোগ কমে আসে।
- শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সবসময় ক্লান্তিভাব দেখা দেয়।
- শরীরে সবসময় শীত অনুভুত হয়।
- কোনো কারন ছাড়াই মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।
- শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুল্কানির মত সমস্যা দেখা দেয়।
- বমি ভাব শুরু হয়।
কিডনি রোগের প্রতিকার
- ডায়াবেটিস এর পরিমান নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।
- উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে ফেলতে হবে।
- নিয়মিত ব্যায়াম বা হাটার অভ্যাস করতে হবে।
- আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে।
- ধুমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
- খাবার খাওয়ার সময় অতিরিক্ত লবন খাওয়া যাবে না।
- প্রচুর শাকসব্জি খেতে হবে।
- দৈনিক ৭-৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
কিডনিতে পাথর হলে কি ব্যায়াম করতে হবে
- এরোবিক ব্যায়াম – এই ধরনের ব্যায়াম এর মধ্যে হাটাচলা করা, সাইকেল চালানো, সাতার কাটা ইত্যাদি বিষয় থাকে। এই ব্যায়ামগুলো করার ফলে আমাদের কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং কিডনি সুস্থ থাকে।
- শক্তি প্রশিক্ষন – এই ধরনের ব্যায়াম এর মধ্যে স্কোয়াট, লাঞ্জ, পুশ আপ ইথাদি থাকে থাকে। অল্প অল্প করে প্রতিদিন এই ধরনের ব্যায়াম করতে হয়।
- নমনীয়তা পরীক্ষা – এইভাবে হাত পা ছেড়ে দিতে হয় এবং যতদুর পর্যন্ত যায় ধীরে ধীরে সেদিকে নিয়ে যেতে হয়।
- ভারসাম্য প্রশিক্ষন – এই ব্যায়াম এর মধ্যে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা, বসে থেকে পায়ের পাতায় হাত দিয়ে ছোয়ার চেষ্টা করা ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে।
- সম্ভব হলে প্রতিদিন যোগব্যায়াম এর চেষ্টা করা।
কিডনি রোগী কি কি সবজি খেতে পারবে
- যেসব সবজি খেতে পারবেঃ ঝিঙ্গা, পটল, শসা, ডাটা, লাউ, চালকুমড়া ইত্যাদি সবজি খাওয়া যাবে।
- যেসব শাক খেতে পারবেঃ লাউ শাক, ডাটা শাক, লাল শাক ইত্যাদি খেতে পারবে।
- যেসব সবজি খেতে পারবে নাঃ বরবটি, সজনে, মিষ্টি আলু, ঢেড়স, পালং শাক, পুই শাক ইত্যাদি সবজি খেতে পারবে না।
- যেসব ফল খেতে পারবে নাঃ কামরাংগা, লেবু, বরই, কলা, আনার, আমড়া ইত্যাদি ফল খাওয়া যাবে না।
কিডনিতে পাথর হলে কি খেতে হবে
যেসব খাবার খাওয়া যাবে
- সাইট্রাস জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে।
- একটু বেশি পরিমানে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
- অনেক বেশি পরিমানে পানি পান করা উচিত। দিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি করতে হয়।
- পালং শাক খাওয়া যাবে।
- বিট জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে।
- বিভিন্ন ধরনের বাদাম খাওয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা । মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ
যেসব খাবার খাওয়া যাবে না
- কামরাঙ্গা এবং এই জাতীয় ফল খাওয়া যাবে না।
- কলা খাওয়া যাবে না।
- এভোকেডো খাওয়া যাবে না।
- কমলালেবু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- কিউই এবং এই ফাতীয় ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
লেবু কি কিডনির জন্য ক্ষতিকর
লেখকের মন্তব্য
Related Posts:
Sumon is a health specialist and sociologist dedicated to improving community well-being. With expertise in public health and social dynamics, HE has led numerous health initiatives and conducted impactful research. Passionate about fostering healthier communities through informed, compassionate care, Sumon combines knowledge and empathy to create holistic solutions.
One Comment